সন্তানের কিছু গুরুত্ত্বপূর্ণ হক ও অধিকার

  

পিতা-মাতার নিকট সন্তানের অধিকার
সন্তানের হক




আল্লাহ তাআলা সন্তানের কাছে পিতা-মাতার যেমন হক দিয়েছেন। ঠিক তার পূর্বেই পিতা-মাতার কাছেও সন্তানদের কিছু হক দিয়েছেন। প্রত্যেকটি বাবা-মাকে এই হক ও অধিকার গুলোর প্রতি মনোযোগী হতে হবে। অন্যথায় তারাও সন্তানের নিকট কোনো অধিকারের দাবি করতে পারবেন না।

হযরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) এর খেলাফত কালে, এক ব্যক্তি বিচার নিয়ে হাজির হলেন। নিজের ছেলের বিরোদ্ধে মামলা দায়ের করলেন। যে ছেলে তার পিতা-মাতার প্রতি যে সব হক রয়েছে, সেগুলো সে আদায় করে না। বাবা-মায়ের প্রতি সঠিক ভাবে খেয়াল রাখে না।
তখন উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) ছেলে জিজ্ঞেস করলেন, কেন তুমি পিতা-মাতার সাথে ভালো আচরণ করো না, তাদের প্রতি খেয়াল রাখো না, তাদের সকল হক ও অধিকার আদায় করো না ?
প্রতিউত্তরে সে বলল, হে আমিরুল মুমীনীন! আমার পিতা আপনার নিকট শেকায়েত করেছে। আমি আপনার কাছে একটি প্রশ্ন করতে চাই। পিতা-মাতার কাছে কি সন্তানের কোন হক নাই? যদি থাকে তাহলে আমার বাবা কি আমার সেই হক আদায় করেছেন?
খলিফা উমর (রা.) যখন জানতে পারলেন যে, তার পিতা সন্তানের হক আদায় করেনি। তখন তিনি এই লোককে বলে দিলেন। তুমি তমার সন্তানের আদায় করোনি। তাই তোমার সন্তানও তমার হক আদায় করেনা ।

সুপ্রিয় সুধি !  সেজন্য পিতা-মাতা তাদের সন্তানদের হক সম্পর্কে জ্ঞান রাখা ও হক সমূহ আদায় করা অত্যন্ত জরুরী । আজ আমরা সংক্ষেপে সে বিষয় কিছু জানার প্রয়াস পাব।

সন্তান জন্মের পূর্বেই, বাবা হিসেবে একজন উত্তম ও পরহেজগার মা ব্যবস্থা করা ( আল্লাহভীরু মেয়েকে বিবাহ করা) । মা হিসেবে একজন উত্তম ও সৎ বাবা পছন্দ করা ( দ্বীনদার পুরুষকে বিবাহ করা)। তারপর তাদের উভয়ের সম্মিলিত দায়িত্ব শুরু হয়। তা নিম্নরূপঃ

১ | আল্লাহর কাছে উত্তম সন্তানের জন্য অধিক দোয়া করা ।
২ | সন্তান গর্ভে আসলে সব গোনাহ থেকে বিরত থাকা, যেন গোনাহের খারাপ প্রভাব সন্তানের উপর না       পরে।
৩ | বেশি বেশি ইবাদত করা, যাতে সন্তানের উপর এর উত্তম প্রভাব পরে ও উত্তম চরিত্রবান হয় ।
৪ | জন্মের পর পর কানে আযান দেওয়া ।
৫ | তাহনীক করা ।
৬ | ৭ম দিনে আকিকা করা ।
৭| সদকাহ করা ।
৮ | সুন্দর ও অর্থবহ নাম রাখা ।
৯ | খতনা করানো ।
১০ | আল্লাহ একাত্ববাদ ( তাওহীদ বাণী ) শিক্ষা দেওয়া ।
১১ | দ্বীনী ইলম শিক্ষা দেওয়া ।
১২ |  সঠিক ভাবে কোরআন শিখানো ।
১৩ | নামাজ শিখানো ও নামাজী করে গড়ে তোলা ।
১৪ | আদব,শিষ্টাচার,নৈতিকতা শিক্ষা দেওয়া ।
১৫ | ইসলাম বিরোধী কাজ করা থেকে বিরত রাখা ও বাধা দেওয়া ।
১৬ | অশ্লীল,বেহায়াপনা,পাপকাজ,বিজাতীয় কালচার থেকে বিরত রাখা ।
১৭ | সন্তানকে ভালোবাসা ও স্নেহ করা ।
১৮ | সব সন্তানকে সমান চোখে দেখা ।
১৯ | প্রপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত দেখা-শুনা, লালন-পালন করা ।
২০ | স্বাবলম্বী করে তৈরি করা ।
২১ | সঠিক সময়ে বিবাহ দেওয়া ।
২২ | তাদের মঙ্গলের জন্য সর্বদা আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করা ।

আল্লাহ তাআলা সকল পিতা-মাতাকে তাদের সন্তানদের হক আদায় করার তৌফিক দান করুন, আমীন ।




Previous Post Next Post

Ads